আগের পর্ব - ডপলার এফেক্ট – Doppler effect
ক্যামেৱা কিভাবে কাজ করে, How Do Old Film Cameras Work, আতশী কাঁচ দিয়ে দেওয়ালের গায়ে ছবি ফেললে ছবি উলটো দেখায়
|
ক্যামেৱা কিভাবে কাজ করে – How Do Old Film Cameras Work
আলো নিয়ে যখন এতো কথাই হলো তখন আর ক্যামেরার কথাই বা বাদ থাকে কেন?
হাজার হোক ক্যামেরা তো কায়দামাফিক আলো ধরার ফাদ ছাড়া আর কিছুই নয়। শুরু করা যাক একটা মজার পরীক্ষা থেকে। অন্ধকার ঘরে একটা মোমবাতি জ্বালো, আর একটা কার্ডবোর্ড বা পিচবোর্ড বা একটা মোটা কাগজ নাও, কাগজটার মাঝখানে আলপিন বড় বোনের চুলবাঁধার মাথার কাঁটা দিয়ে একটা ছোট্ট ফুটো করে নাও!
ঐ কার্ডবোর্ডটা এইবার মোমবাতি আর ঘরের দেয়ালের মাঝে রাখো, দেখবে ঘরের দেওয়ালে মোমবাতির ছবি পড়েছে। এই পরীক্ষাটা অন্য আর একভাবেও করতে পারো। দিনের বেলা ঘরের সব দরজা জানালা বন্ধ করে দাও, একেবারে ঘর ঘুরঘুটি অন্ধকার করে কেবল একটা ছোট্ট ফুটো রাখো আলো আনার জন্যে। দেখবে ঘরের দেওয়ালে বাইরের ঘরবাড়ি গাছপালার ছবি পড়ছে। আর দেওয়ালে যদি ফটোর প্লেট রাখো তো একেবারে ফটোও তুলতে পারো এই উপায়ে।।
আসল ক্যামেরাও এইরকম ভাবেই কাজ করে। সেখানে ঘর অন্ধকার না করে একটা চতুর্দিক ঢাকা অন্ধকার বাক্সের ভেতর ফটোর প্লেট রাখা হয় আর বাক্সের সামনের একটা ফুটো দিয়ে বাইরের জিনিসের ছবি ফেলা হয় প্লেটটার ওপর। অবশ্য একটা বিশেষ তফাত আছে তোমার তৈরি ফুটো ক্যামেরার সঙ্গে আসল ক্যামেরার ফুটো ক্যামেরায় দেখবে ছবি বেশ পরিষ্কার ( sharp) হলেও বড় মিনমিনে ( dim ), কাজেই ফটো তুলতে হলে প্লেটটার ওপর অনেকক্ষণ ধরে ছবিটাকে ফেলতে হবে—অর্থাৎ ফটোগ্রাফ-তুলনেওয়ালাদের ভাষায় অনেকক্ষণ ধরে exposure দিতে হবে। আর তা তো হবেই। ওইটুকু ফুটো দিয়ে কতটা আলোই বা পড়ে প্লেটটার ওপর? বেশতো, ফুটোটা বড়ো করে দিলেই তো বেশি আলো যাবে আর ফটোও তাড়াতাড়ি তোলা যাবে। তাও কিন্তু হয় না। তোমরা নিজেরা পরীক্ষা করে দেখো ফটো ক্যামেরার ফুটোটা বড়ো করে দাও দেখবে ছবিটা আর পরিষ্কার দেখাচ্ছে না। কাজেই ছবি উজ্জ্বল হলেও কোনো কাজেই এলো না। অতএব আসল ক্যামেরায় ফুটো এমনভাবে বড় করতে হবে যাতে আলো যায় বেশি অথচ ছবি বেশ পরিষ্কার হয়। সে কী করে করা যাবে?
কেন লেন্স দিয়ে।
লেন্স আবার কি?
লেন্স অবশ্য অনেক রকমের হয়। আমাদের দরকার পেটমোটা লেন্স। এইরকম লেন্স হচ্ছে আতশী কাঁচ বা তোমার দাদার চশমার কাচ। একটা আতশী কাঁচ বা চশমার কাঁচ জোগাড় করে একটা পরীক্ষা করা যাক। রৌদ্দুরে ছাতে কিংবা উঠানে গিয়ে একটা আতশী কাঁচ ধরো মেঝে থেকে একটু ওপরে, দেখবে রৌদ্দুরে আতশী কাচের ভেতর দিয়ে যাবার সময় বেঁকে যাচ্ছে কাচের প্লেটের দিকে, আর সমস্ত রোদ্দরে যেন একটা বিন্দুতে এসে জমছে ( কেন্দ্রীভূত হচ্ছে)। এই বিন্দুতে আলোর তেজও বেড়ে যাচ্ছে। এই বিন্দুটাকে বলে focus বা ফোকাস।
আতশী কাচের দুদিকে দুটো ফোকাস থাকে আর যখন আতশী কাঁচ দিয়ে কোন জিনিসকে দেখা হয় তখন সেই জিনিসটার ছবি কী ভাবে দেখি তা নিচের ওই ছবিতে দেখ। কিন্তু এখানে তো ছবিটা উল্টো উঠেছে। আর তাইই ওঠে ক্যামেরায়। তবে ছবিটা ঠিক যে জায়গায় আছে ফটোর প্লেটটা সেই জায়গাতেই রাখতে হবে, তা না হলে ছবি উঠবে না। সেই জন্যই ক্যামেরার বাক্স টেনে ছোট বড় করার ব্যবস্থা থাকে যাতে ঠিক ছবির জায়গায় প্লেট রাখা যায়!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন