কিং অফ ইনভেন্টরস,টমাস আলভা এডিসন,King of Inventors,Thomas Alva Edison,টেলিগ্রাফ,কার্বন ট্রান্সমিটার,বৈদ্যুতিক বাতি,ফনোগ্রাফ,এলকালাইন স্টোরেজ ব্যাটারি |
কিং অফ ইনভেন্টরস – টমাস আলভা এডিসন - King of Inventors - Thomas Alva Edison
টমাস আলভা এডিসন কে বলা হত, উইজার্ড অফ মেনলো পার্ক। তিনি ৮৪ বছর বেচে ছিলেন। এই দীর্ঘ জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্য্যন্ত বিজ্ঞানের সেবা করে গেছেন। প্রতিনিয়তই আবিষ্কার করে গেছেন নতুন নতুন জিনিস। যেমন পরিশ্রম করেছেন, ঠিক সেভাবেই সাফল্য ধরা দিয়েছে তার হাতের মুঠোয়। যুক্তরাস্ট্রের ইতিহাসে তার প্রায় ১০৯৩ টি আবিষ্কার এর পেটেন্ট রয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল ফনোগ্রাফ আর জ্বলজ্বলে বাতি। যে বাতি ব্যাবহার করা হত মোশন পিকচারস এর মত বিশ্ব বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানে। তিনি শুধু একাধারে বিজ্ঞানীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন সফল উৎপাদক, ব্যবসায়ী আর উদ্যোক্তা।
এই সফল মানুষটির জন্ম যুক্তরাষ্ট্র এর ওহিও অঙ্গরাজ্যের রাজধানী মিলানে ১১, ফেব্রুয়ারী ১৮৪৭সালে। তিনি ছিলেন বাবা মায়ের ৭ম ও সর্ব কনিষ্ঠ সন্তান। আমাদের মত স্কুল, কলেজ আর ইউনিভার্সিটির শিক্ষার বেশিদিন নেয়ার মত সুযোগ হয় নাই। অল্প বয়সেই তিনি কাজে নেমে যান।পোর্ট হিউরন আর ডেট্রয়েট এর রেইল রোড এ বিভিন্ন ধরনের কাজ শুরু করেন। তরুন বয়সেই তার ছিল বিজ্ঞান গবেষনার প্রতি অদম্য আগ্রহ। গবেষনার অর্থ যোগারের জন্যে তিনি কখনো হয়েছেন রেইলরোডে ফল বিক্রেতা, আবার নিজেই সম্পাদনা করে বের করেছেন ম্যাগাজিন ইত্যাদি।
আমেরিকায় যখন গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, তিনি তখন টেলিগ্রাফির উপর ব্যাপক পড়াশুনা করেন। আর সারা দেশে টেলিগ্রাফার হিসেবে ঘুরে বেড়ান। এ সময় আস্তে আস্তে তার শ্রবণ শক্তিতে সমস্যা বাড়তে থাকে। আর এ সমস্যা পরবর্তীকালে তাকে এমন যন্ত্র উদ্ভাবন করতে সাহায্য করে, যার মাধ্যমে টেলিগ্রাফির বৈদ্যুতিক সংকেত কে কাগজে প্রিন্ট করতে পারেন। ১৮৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি টেলিগ্রাফ নিয়েই পড়ে থাকেন, গবেষনা চালিয়ে যান, নিউজার্সিতে একটি গবেষনা প্রতিষ্ঠান ও উৎপাদনকেন্দ্র এর সুচনা করেন। ১৮৭১ সালে বিয়ে করেন মেরি স্টিল ওয়েলকে যার বয়স ছিল ১৬((( বাল্য বিবাহ নাকি????)))
এবার তিনি কার্বন ট্রান্সমিটার তৈরি করেন যা টেলিফোনের শব্দ কে আরো উচ্চ বিবর্ধিত, আরো সুস্পস্ট করে। এর পর তিনি আরো গবেষনা চালিয়ে যান, আর আবিষ্কার করেন ফনোগ্রাফ, যা বর্তমানের রেকর্ডারের আদি রুপ।
1878 সালে তিনি বৈদ্যুতিক বাতির দিকে মনোনিবেশ করেন। যা পুরোনো গ্যাস
বাতিকে প্রতিস্থাপন করবে বলে আশা করছিলেন। তিনি কাজ শুরু করে দেন।
আর এই কাজে সাহায্য নেন জে পি মরগান আর ভ্যান্ডারবিল্ট
পরিবারের। তিনি প্রায় ১০,০০০ হাজার বস্তু দিয়ে পরীক্ষা করেন। অবশেষে
সাফল্য লাভ করেন প্লাটিনাম ফিলামেন্ট ব্যাবহার করে, তারপর তিনি বাঁশ থেকে কার্বন ফিলামেন্ট তৈরী করেন। যা
দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারযোগ্য বাতি তৈরিতে সাহায্য করে।
এর পর তিনি ক্যামেরা নিয়ে কাজ শুরু করেন। ফনোগ্রাফ আর জিওট্রপ নামক যন্ত্র সংযুক্ত করে এমন এক যন্ত্র উদ্ভাবন করেন, যা আজকের ভিডিও ক্যামেরার প্রাথমিক ধারনা দেয়। কে এল ডিকিন্সন এর সাথে এক যোগে কাজ শুরু করে দেন। আর আবিষ্কার করেন মোশন পিকচার ক্যামেরা, কাইনেটোগ্রাফ আর আর ছবি দেখার জন্যে উদ্ভাবন করেন কাইনেটোস্কোপ। ১৯১৮ সালে মোশন পিকচার থেকে ইস্তফা দেন। এবার এলকালাইন স্টোরেজ ব্যাটারি উদ্ভাবন করেন। বিশ্ববিখ্যাত গাড়ির কোম্পানি ফোর্ড এর মালিক হেনরি ফোর্ড তাকে সেল্ফ স্টার্টার ব্যাটারি তৈরীর প্রস্তাব দেন। তিনি আবারো সাফল্য লাভ করেন। এই মহান বিজ্ঞানী শেষ বয়সেও গবেষনা থেকে থেমে যান নাই। জীবন টা শুরু করেছিলেন, কিঞ্চিত শিক্ষিত এক রেইলরোড শ্রমিক হিসেবে, আর জীবন শেষ হয় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ একজন আবিষ্কারক ও উদ্ভাবক হিসেবে। কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায় এর মাধ্যমে আধুনিক যন্ত্র প্রকৌশল এর ভিত্তি প্রস্থর তিনিই গড়ে দিয়ে যান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন