পূর্বের পর্ব - আলো-খেকোদের কথা – Light Absorber
বিভিন্ন রং এৱ ৱহস্য – The Mystery of Colours
দিনের আলোয় পৃথিবীর দিকে চেয়ে দেখলাম—কতো রকম রং বেরং-এর জিনিস। কোনোটা লাল, কোনোটা সবুজ, কোনোটা সাদা, কোনোটা কালো-এই রকম কতোই না!
কিন্তু কথা হলো, এতো সব রং-বেরং কেন? জবা গাছের পাতাটাই বা সবুজ কেন আর ফুলটাই বা কেন লাল? তার আসল কারণ, এরা সবাই আলো-খেকোর দল। জবা ফুলের ওপর সূর্যের আলো গিয়ে পড়ার পর জবা ফুল কেবল লাল রংটি ছাড়া সূর্যের আলোর মধ্যেকার বাকি সব রং-এর আলোই আত্মসাৎ করে নেয়, ছাড়া পায় শুধু লাল রং-এর আলোটুকু। এই আলোই জবা ফুল থেকে এসে পৌছায় আমার চোখ পর্যন্ত আর তাই জবা ফুলটাকে, আমি দেখি লাল রং-এর দেখতে। জবা গাছের পাতাটার বেলায় কিন্তু অন্য রকম : শুধু সবুজ রং-এর আলোর দিকে। তার কোন রুচি নেই, বাকি সব রং-এর আলোই সে দিব্বি হজম করে নেয়।
আর আলো-খেকো হিসেবে সবচেয়ে বেশি হ্যাঙলা (লোভী) কোন জিনিসগুলো তা জানো তো?
যেগুলোর রং কালো সেইগুলো। কেননা, তারা কোনো রং-এর আলোকেই রেহাই দেয় না, সবাইকেই খায় গিলে। তাই তাদের কাছ থেকে কোনো আলোই ফিরে আসে না, সেই জন্যেই ওরা আলো-হীন, অর্থাৎ কালো। আর সাদা দেখতে যে-সব জিনিস সেগুলোর যেন সব আলোতেই অরুচি, সূর্যের আলোর মধ্যেকার কোনো রং-এর আলোই তার রোচে না, সবগুলোই দেয় ফেরত পাঠিয়ে।
আলো নিয়ে যোগ-বিয়োগ
সাদা আলোটা যদি অনেকগুলো রঙিন আলোর যোগফল হয় তাহলে সাদা আলো থেকে একটা কোন রঙিন আলোকে বিয়োগ করে দিলে যা বাকি থাকবে তাও নিশ্চয়ই রঙিন আলো হয়ে যাবার কথা। আর হয়ও ঠিক তাই। সাদা আলো থেকে হলদে রং-এর আলো বাদ দিয়ে দাও, পড়ে থাকবে নীল আলো। সরিয়ে নাও সবুজ আলো, বাকি থাকবে ঘোর লাল রং-এর আলো। তাহলে নিশ্চয়ই হলদের সঙ্গে নীল যোগ করলে আবার ফেরত পাবো সাদা আলো, ঘোর লালের সঙ্গে সবুজ যোগ দিলেও ফেরত পাবে সাদা। বিভিন্ন রং-দের মধ্যে এ-হেন যে-সম্পর্ক তাকে বলে পরিপূরক বা complementary সম্পর্ক।
পরের পর্ব - বর্ণালী ও রৈখিক বর্ণালী – Light spectrum and Line Spectrum (Bengali)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন