আমাদের সুড়সুড়ি লাগে কেন?,Why are we ticklish? |
আমাদের সুড়সুড়ি লাগে কেন? - Why are we ticklish?
হাতের নিচে, পিঠে, হাঁটুর ওপরে ও কাঁধের এমন কতগুলো জায়গা আছে যেখানে কেউ আঙুল বা কোনো নরম বস্তু দিয়ে সুড়সুড়ি দিলে আমরা হাসিতে ফেটে পড়ি। আসলে শরীরের এসব এলাকা খুব স্পর্শকাতর। এখানে সামান্য স্পর্শানুভূতির সংবাদ সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কে যায় ও সেখান থেকে প্রতিক্রিয়া হিসেবে যে সংকেত আসে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে দুভাবে। যদি কোনো মাকড়সা, আরশোলা বা পোকামাকড় গায়ে হাঁটতে শুরু করে তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। কিন্তু যখন শরীর নিশ্চিত হয় যে সেটা ভয়ের কিছু না, অন্য কারো স্পর্শ লেগেছে, তখন ভয়ের পরিবর্তে হাসি আসে, যা আসলে আতঙ্ক প্রশমনেরই এক ধরনের উপায়। প্রশ্ন হলো নিজেকে নিজে সুড়সুড়ি দিয়ে হাসানো যায় না কেন?
মস্তিষ্ক-বিজ্ঞানীরা এর কারণ হিসেবে বলেন যে মস্তিষ্কের সেরেবেলাম নামক অংশ বুঝতে পারে সুড়সুড়ি কি নিজেকে নিজে দিচ্ছে না অন্য কেউ দিচ্ছে। এই সেরেবেলাম হলো মস্তিষ্কের নিচের দিকের অংশ যা আমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নড়াচড়া নজরদারি করে। সে যখন দেখে নিজেকে নিজে সুড়সুড়ি দিচ্ছে তখন সে শরীরকে চমকে উঠতে দেয় না, কিন্তু যদি বাইরে থেকে কেউ স্পর্শ করে তখনই স্বয়ংক্রিয়ভাবে আতঙ্ক বা হাসি আসে। তবে এমন রোবটও বেরিয়েছে যা দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সক্রিয় করে কেউ নিজেকে নিজে সুড়সুড়ি দিয়ে হাসাতে পারে। এজন্য অবশ্য তাকে চোখ বন্ধ করে শুয়ে রিমোট কন্ট্রোল চালাতে হয় এবং রোবট একটি রোমশ কাঠি দিয়ে সুড়সুড়ি দিতে শুরু করে। এভাবে সেরেবেলামকে ফাঁকি দেওয়া যায়। সে বুঝতে পারে না যে সুড়সুড়িটা অন্য কেউ দিলেও সেটা আসলে নিজেই কারসাজি করে মেশিনকে দিয়ে করিয়ে নিচ্ছে। নিয়মিত হাসা স্বাস্থের জন্য ভালো। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা উদ্দীপিত করার ক্ষেত্রে হাসির ভূমিকা রয়েছে। মনের অসুখ সারানোর জন্য ডাক্তাররা ‘হাসি-থেরাপি’ প্রয়োগ করেন। সাধারণত দিনে আট-দশবার হাসাই যথেষ্ট।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন