ডায়রিয়া, মৃত্যু ও চিকিৎসা, Diarrhea, death and treatment |
ডায়রিয়া, মৃত্যু ও চিকিৎসা - Diarrhea, death and treatment
প্রথম থেকেই স্যালাইন পান করলে সাধারণত ডায়রিয়ায় কেউ মারা যায় না। তবে কখনো যদি রোগ তীব্র হয়ে ওঠে তাহলে বিপর্যয় দেখা দেয়। এর কারণ হলো পানিশূন্যতা। এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু প্রশ্ন হলো শরীরের পানির সঙ্গে জীবন-মৃত্যুর সম্পর্ক কী? মানুষের শরীরের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই পানি। এই পানির অনেক কাজ। হার্ট সচল রাখা, হৃৎস্পন্দনের গতি নিয়ন্ত্রণ, প্রয়োজনে শরীর থেকে ঘাম বের করে শরীরের তাপমাত্রা স্থির রাখতে সাহায্য করা প্রভৃতি কাজ করে পানি। হাতের কনুই, পায়ের হাঁটুসহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট বা সংযোগস্থলের চারপাশে সঞ্চিত পানি ও অন্যান্য তরল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনে সাহায্য করে। দেহের জীবকোষ ও বিভিন্ন অঙ্গের কাজ পরিচালনার জন্যও পানি দরকার। ডায়রিয়ায় পানিশূন্যতার ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস ও চলাফেরায় অসুবিধা তো হয়ই, সেই সঙ্গে আরেকটি বড় সমস্যা দেখা দেয়। পানির সঙ্গে শরীর থেকে ইলেক্ট্রোলাইটও (ধাতু ও অধাতুর আয়ন) বেরিয়ে যায়। ইলেক্ট্রোলাইট হলো সোডিয়াম ক্লোরাইড, পটাশিয়াম বাই-কার্বনেট প্রভৃতি লবণ। এরা দেহের স্নায়ুকোষের মাধ্যমে মস্তিষ্কে ও বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সংকেত আদান-প্রদানে সহায়তা করে। এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি এরা করে ইলেক্ট্রিক-ইম্পালস পরিবহনের মাধ্যমে। ডায়রিয়ায় অতিরিক্ত পানির সঙ্গে ইলেক্ট্রোলাইট শরীর থেকে বেরিয়ে যায় বলেই মানুষ নির্জীব হয়ে পড়ে, কারণ তখন সে স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে ঠিকভাবে খবর পৌছাতে পারে
না, মস্তিষ্কও কোনো নির্দেশ পাঠাতে পারে না। এ অবস্থায় মৃত্যু অবধারিত হয়ে উঠতে পারে। তাই ডায়রিয়ার সহজ চিকিৎসা হলো প্রয়োজন অনুযায়ী স্যালাইন খাওয়া, পানিসহ প্রচুর তরল পান করা। এতে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট তথা ওইসব লবণের অভাব দূর হয়, শরীর প্রাণবন্ত থাকে। এক চিমটি লবণ ও একমুঠো গুড় এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে স্যালাইন বানানো যায়। কারণ গুড়ে আছে কিঞ্চিত পটাশিয়াম আর লবণে আছে সোডিয়াম ক্লোরাইড। মনে রাখা দরকার, এই সব লবণের নির্দিষ্ট অনুপাত ঠিক রাখা দরকার, না হলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন