লুই পাস্তুর,চিকেন কলেরার টিকা আবিষ্কারের গল্প,Louis Pasteur,Discovery of chicken cholera vaccine |
লুই পাস্তুর ও চিকেন কলেরার টিকা আবিষ্কারের গল্প - Louis Pasteur and Discovery of chicken cholera vaccine
রেশম পোকার ঘটনার পর আবার কিছু লোক এল পাস্তুরের কাছে তাদের মুরগিতে মড়ক লেগেছে। কাল যে-মুরগি দিব্যি তাজা হেঁটে বেড়িয়েছে, আজ সকালে হয়তো দেখা গেল তার পাখা নেতিয়ে পড়েছে, পালক সব কাটা দিয়ে উঠেছে—তারপর খানিকক্ষণের মধ্যে সে-মুরগি ঢলে পড়ছে মৃত্যুর কোলে। এ হল মুরগির কলেরা, মানুষের কলেরার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই। আর ফ্রান্সে একবার মুরগির কলেরার মড়ক লাগলে শতকরা নব্বইটা মুরগি মারা পড়ত।।
১৮৭৭ সালে তিনি কাজ শুরু করলেন। হেনরি টাউসেইন্ট (Jean Joseph Henri Toussaint) তখন পাস্তুরকে জীবাণুর কিছু নমুনা পাঠালেন। পরে পাস্তুরের নামানুসারে এই জীবাণুর নাম রাখা হয়েছিল পাস্তুরেলা মাল্টোসিডা (Pasteurella multocida)। প্রায় এক বছর পরীক্ষার পর বুঝতে পারলেন এই জীবাণু গুলো তেমন সংক্রামক নয়।
পাস্তুর অসুস্থ মুরগির রক্তে আবিষ্কার করলেন এই মারাত্মক রোগের জীবাণু। এমনি একটা অসুস্থ মোরগের ঝুঁটি থেকে কয়েক ফোটা রক্ত নিয়ে ফেললেন মুরগির মাংসের ঝোলে। রক্তের জীবাণুরা তাড়াতাড়ি বাড়তে লাগল ঝোলের খাবার পেয়ে। তারপর কয়েক টুকরো রুটিতে মেখে নিলেন সেই ঝোল। এই ঝোল মাখা রুটি যে ক’টা মুরগিকে খাওয়ালেন তার সবগুলো কলেরা হয়ে মারা গেল। ঝোলটা খোলা পড়ে থাকল ক’দিন। পাস্তুর তার সহকারী চেম্বারল্যান্ডকে বলল পরের বন্ধের দিন এগুলো আবার মুরগীর দেহে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করাতে। সে পরের বন্ধের দিন এটা করতে ভুলে যায়। প্রায় এক মাস পরে সে এই বাসী হয়ে যাওয়া দূর্বল জীবাণুগুলোকে মুরগীর দেহে প্রবেশ করায়। সে ভাবল এবার এগুলোও কলেরায় মারা পড়বে। কিন্তু আশ্চর্য! এরা সামান্য একটু অসুস্থ হয়ে আবার চাঙ্গা হয়ে উঠল। এদের গায়ে এরপর দেওয়া হল টাটকা রোগের জীবাণু। তাতেও তারা মারা পড়ল না। অর্থাৎ পাস্তুর আবিষ্কার করে ফেলেছেন এক বিস্ময়কর নতুন তত্ত্ব। বাসি জীবাণু মুরগির শরীরে রোগ ঠেকাবার ক্ষমতা জন্মায়। এই নিয়মটা কি অন্য রোগের বা অন্য প্রাণীর বেলাতেও খাটবে?
পাস্তুর ১৮৮০ সালে তার বিস্তারিত গবেষণার ফলাফল ফ্রেঞ্চ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস এ দাখিল করে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন