কস্তুরী সুগন্ধি কি, কস্তুরী সুগন্ধি কোথায় পাওয়া যায়,Musk Deer perfume |
কস্তুরী সুগন্ধি কি ও কোথায় পাওয়া যায়? - Musk Deer perfume
হিমালয়ের উচ্চ প্রদেশে কস্তুরী মৃগ বা মাস্ক ডিয়ার নামে এক পুরুষ হরিণ পাওয়া যায় । এরা খুব লাজুক প্রকৃতির। তাই নির্জনে বিচরণ করতে ভালোবাসে। কিন্তু কস্তুরী সুগন্ধি জিনিসটা কি? এদের নাভীমূলের গ্রন্থিতে একটা কোষ জন্মায়। এই কোষটি যখন পূর্ণাঙ্গ হয় তখন তার থেকে সুগন্ধ বেরোতে থাকে। হরিণ এই গন্ধের সন্ধানে পাগলের মতো ছুটাছুটি করতে থাকে। সে বুঝতেই পারে না গন্ধটা তার নিজের মধ্যেই রয়েছে। বছর দশেক বয়েস হলে কস্তুরী মৃগের এই কোষটি পূর্ণাঙ্গ হয়। তখন ওই মৃগকে হত্যা করে তার গ্রন্থিটা সম্পূর্ণ তুলে রোদে শুকনো করা হয়। এই গ্রন্থির বাইরের দিকটায় থাকে ললাম আর মাঝখানে ছোট্ট একটা ছিদ্র। কাঁচা অবস্থায় ওই গ্রন্থি থেকে কিছু বোঝা যায় না যে ওর মধ্যে এত সুগন্ধি লুকোনো আছে। কিন্তু যখন চামড়া ও লোমগুলো তুলে ফেলে গ্রন্থিটাকে জলে ভেজানো হয়, তখনই ওর সুগন্ধ বেরোতে আরম্ভ করে। কস্তুরী শুধুমাত্র গন্ধ পাগল করা সুগন্ধি হিসেবেই ব্যবহৃত হয় না, হৃদযন্ত্রের পরিপুষ্টির জন্য, হরমোন এবং ওষুধ রূপেও এর ব্যবহার আছে।
বিড়াল, ইঁদুর বা গাছের মূলেও কি কস্তুরীর মতো সুগন্ধি থাকতে পারে?
হরিণের মধ্যে খুব কম পরিমাণে কস্তুরী পাওয়া যায়। এক কিলোগ্রাম কস্তুরী পেতে হলে প্রায় দু'হাজার হরিণকে মেরে ফেলা দরকার। তাই রসায়নবিদরা কৃত্রিম উপায়ে এটাকে তৈরির চেষ্টা করতে লাগলেন। জার্মান ও সুইডিস বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম উপায়ে কস্তুরী তৈরি করে তার নাম দিলেন মাস্ক-কোন। বিজ্ঞানীরা দেখলেন, সিভেট নামে এক ধরনের বিড়াল ও আমেরিকায় মাস্ক ইঁদুরের দেহের ভেতরেও কস্তুরী মৃগের অনুরূপ সুগন্ধি পাওয়া যায়। সিভেট বিড়াল থেকে প্রচুর পরিমাণে সুগন্ধি সিভেটোন সংগ্রহ করা হয় এবং কস্তুরী মৃগের মতো একে মেরে ফেলার প্রয়োজন হয় না। আজকাল গবেষণাগারেও কৃত্রিম পদ্ধতিতেও সিভেটোন তৈরি হচ্ছে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, মাস্ক-কোন এবং সিভেটোন অণুর গঠনে মোটামুটি সাদৃশ্য আছে। এদের অণু কার্বন, হাইড্রোজেন এবং একটি মাত্র অক্সিজেন দিয়ে তৈরি। পনেরো থেকে সতেরোটি কার্বন পরমাণু-বিশিষ্ট অণুরই শুধু সুগন্ধ আছে। কস্তুরী যে কেবল হরিণ, বেড়াল বা ইঁদুরের মধ্যেই পাওয়া যায়, তা নয়। কোনো কোনো গাছের বীজ ও মূলের ভেতরেও কস্তুরী লুকিয়ে আছে।
good
উত্তরমুছুন