রোবট আবিষ্কারক, রোবট কত প্রকার,রোবটিক্স কি, রোবট কি,রোবট কিভাবে বানায়,রোবট সোফিয়া |
রোবট এর ইতিহাস ও প্রকারভেদ – Robots
রোবট কথার অর্থ কি?
রোবট শব্দটি এসেছে পূর্ব ইউরোপের স্লাভোনিক ভাষা থেকে। স্লাভদের এই ভাষায় ‘রোবোটো’ শব্দের অর্থ হচ্ছে দাসত্ব। এই শব্দ থেকেই যন্ত্র-দাস বা যন্ত্র-ক্রীতদাস অর্থে রোবট শব্দটির ইংরেজি ভাষায় প্রথম ব্যবহার করেন ইউরোপীয় লেখক ক্যারেল চ্যাপেক, তাঁর ‘আর-ইউ-আর’ নাটকে। নাটকটি প্রাগ-এ প্রথম অভিনীত হয় ১৯২১ সালে। চ্যাপেক-এর নাটকের পর থেকেই রোবট শব্দটি ইংরেজি ভাষায় পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নেয়।
প্রথম রোবট কে তৈরি করেছিলেন?
এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে পণ্ডিত মহলে বিতর্ক রয়েছে। প্রথম রোবট তৈরী করেছিলেন ১২ শত শতাব্দীতে মুসলিম বিজ্ঞানী ইসমাইল আল ঝাজারী (Ismail al-Jazari)। তিনি পানীয় পরিবেশনকারী রোবট তৈরী করেছিলেন।
প্রথম সফল রোবট আবিষ্কারক হিসেবে মার্কিন-ব্রিটিশ স্নায়ুবিজ্ঞানী উইলিয়াম গ্রে ওয়ালটারের নাম করা হয়। সম্ভবত তিনিই প্রথম রোবট-পশু তৈরি করেছিলেন। ওয়ালটার তার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র-পশুর নাম দিয়েছিলেন টেসটিউডো, লাতিন ভাষায় যার অর্থ কচ্ছপ। বিদ্যুৎচালিত টেসটিউডো যন্ত্রটি তিনি এমনভাবে তৈরি করেছিলেন, যাতে সেটি কোনো জীবন্ত প্রাণীর একাধিক প্রতিক্রিয়া নকল করতে পারে। যেমন, যন্ত্রটির চোখের জায়গায় বসানো ছিল আলোক-তড়িৎ কোষ, স্পর্শ অনুভব করার জন্য ছিল সুবেদী ব্যবস্থা। এ ছাড়া, সামনে পিছনে কিংবা বাঁক নিয়ে চলার জন্য ছিল একাধিক মোটর ও চাকার আয়োজন। টেসটিউডো অন্ধকারে চলে বেড়াতে পারতো। চলার পথে যখনই কোনো কিছুতে বাধা পেত, তখনই কিছুটা পিছিয়ে এসে সামান্য বাঁক নিয়ে, আবার এগিয়ে যেত সামনের দিকে। এইভাবে বার বার বাধা পেয়েও সে এগিয়ে যেতে পারতো সামনের দিকে। আবার তার তড়িৎ-চোখ কোনো আলো দেখতে পেলে সরাসরি এগিয়ে যেত সেই আলোর দিকে। আজকের দিনে টেসটিউডো-এর মতো বুদ্ধিমান খেলনা হয়তো অনেক পাওয়া যাবে, কিন্তু ওয়ালটারের সময়ে তার বুদ্ধিমান রোবট-পশু যে একটি অভিনব আবিষ্কার ছিল তাতে সন্দেহ নেই।
রোবট কত প্রকার?
বিভিন্ন জিনিসের যেমন শ্রেণীবিভাগ আছে, তেমনি রোবটেরও শ্রেণীবিভাগ রয়েছে। রোবটকে প্রধানত তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়—টার্টল, আর্ম ও মোবাইল। টার্টল অনেকটা গ্রে ওয়ালটারের টেসটিউডো-র মতো, ছক বাঁধা নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্টভাবে চলাফেরা করে। আর্ম হলো বাহুসম্পন্ন রোবট, যা একই জায়গায় স্থির থেকে শুধু যান্ত্রিক হাত নেড়ে কোনো জিনিস তুলে নেয়, জোড়া লাগায় বা নির্দিষ্ট কোনো কাজ করে। আর মোবাইল হলো টার্টল-এর চেয়ে বুদ্ধিমান চলমান মোটর রোবট। এ ধরনের রোবটের বহু বিচিত্র নির্দেশ মেনে কাজ করার ক্ষমতা আছে। যেমন কুকুরকে বেড়িয়ে নিয়ে আসা, গ্লাসে জল ঢেলে হাতে তুলে দেওয়া, এরকম আরো বহু কাজ। রোবটের মস্তিষ্ক হচ্ছে একটি কম্পিউটার, আর তাকে যে সব নির্দেশ দেওয়া হয়, সেগুলোকে কম্পিউটার প্রোগ্রাম বলা যেতে পারে। আর্ম রোবটের বেশির ভাগ কল-কারখানায় কাজে লাগানো হয়। আর টার্টল রোবট বিভিন্ন গবেষণা ও বুদ্ধিমান খেলনা তৈরি করতে বেশি কাজে লাগে।
ট্যাগঃ রোবট আবিষ্কারক, রোবট কত প্রকার,রোবটিক্স কি, রোবট কি,রোবট কিভাবে বানায়,রোবট সোফিয়া
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন