বুধবার, ২১ জুলাই, ২০২১

সায়েন্স ফিকশন - শেষ কিংবা শুরু - অনিক খান - Science fiction - Shesh kingba shuru - Anik Khan

Science fiction,সায়েন্স ফিকশন,বিজ্ঞান কল্পকাহিনী,

সায়েন্স ফিকশন - শেষ কিংবা শুরু - অনিক খান - Science fiction - Shesh kingba shuru - Anik Khan

সিরাম নগরী জুড়ে হঠাৎ করেই দারুণ হইচই পড়ে গেছে। স্কুল কলেজ অফিস সব জায়গায় একটা বিষয়েই আলাপ চলছে। সবার চোখে মুখে খেলা করছে দারুণ কৌতূহল আজকের প্রতিটি ইলেক্ট্রনিক নিউজ ফোরাম জুড়ে একটিই খবর বিজ্ঞানী ম্যাথু ড্যুরের যুগান্তকারী আবিষ্কার, যা নাকি বদলে দেবে বর্তমান পৃথিবীর জীবন ব্যবস্থা। কিন্তু নিশ্চিতভাবে কেউ এখনও জানে না ব্যাপারটা কি।
খুব অল্প সময়ের নোটিশে এক বিশাল নাগরিক সম্মেলন ডেকেছে সিসিসি- সেন্ট্রাল কমান্ড কাউন্সিল। আরও পরিষ্কার করে বললে, যে প্রতিষ্ঠানটি বর্তমান পৃথিবীকে চালাচ্ছে। স্তর, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেই উন্মুক্ত জনসভায় এমন সম্মেলন সিরাম নগরীতে খুব নতুন নয়। বরং প্রায়ই সিসিসি এমন মিটিং ডেকে সিরাম নগরীর সবাইকে বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে। তবে আজকেরটা একেবারেই অন্য রকম। কারণ আজ এই মিটিংয়ে বক্তব্য রাখবেন বিজ্ঞানী ম্যাথু ড্যুরে স্বয়ং। সিসিসি মূলত তার নির্দেশেই চলে কিন্তু তিনি গত নব্বই বছর জনসম্মুখে আসেন নি। ব্যস্ত ছিলেন কি যেন একটা গোপন গবেষণায়। অন্তরালে চলে যাবার আগে, তার শেষ ভাষণে তিনি বলেছিলেন, আমি আপাতত বিদায় নিচ্ছি তবে খুব শীঘ্রই ফিরে আসব। আর যেদিন আবার আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত হব, আজকের দিন এবং সেদিনের ভেতর থাকবে আকাশ পাতাল তফাৎ কারণ আমি আপনাদের জন্য যে বার্তাটি নিয়ে আসব তা বদলে দেবে আমাদের সবাইকে, সবকিছুকে
আজই সেই দিন। বিকেল পাঁচটায় যে সভা ডাকা হয়েছে, সেই সভাতেই সবাইকে ড্যুরে নিজে উপস্থিত হয়ে জানাবেন তার নতুন আবিষ্কারের বিস্তারিত তথ্য। সাধারণত যেসব নগরবাসী অন্যান্য ব্যস্ততার কারণে সভাগুলোতে আসতে ব্যর্থ হয়, পরদিন তাদের জন্য পৌঁছে যায় সভার বিবরণী। তবে এবারের ব্যাপার ভিন্ন। যারা সভাস্থলে আসতে পারবে না, তাদের কথা মাথায় রেখে শহরের প্রতিটি রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে লাইভ সাইজ হলোগ্রাফিক স্ক্রিন যাতে সম্মেলনের বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। এছাড়াও প্রায় সব নিউজ টেলিকাস্ট সার্ভিসগুলো লাইভ আপডেট করবে ড্যুরের সম্পূর্ণ বক্তব্য।

সিসিসির নিজস্ব অফিস কক্ষে বসে আছেন ড্যুরেতার সামনে কাচুমাচু মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে নির্মম চেহারার একজন। এমন কাচুমাচু ভাব তাকে খুব একটা মানাচ্ছে না। তিনি সামরিক বাহিনী প্রধান গেঞ্জার ফিলজপ্রায় তিনশ বছর আগে ঘটে যাওয়া মানুষের শেষ বিপ্লবে, তার হাতেই ধরা পড়েছে এবং নিহত হয়েছে সর্বাধিক বেপরোয়া মানুষ। তবে এই মুহূর্তে সে খানিকটা বিভ্রান্ত। তাবৎ পৃথিবীর প্রধানের সাথে সরাসরি কথা বলা এক হাজার মানুষ মারার চেয়েও কঠিন। আর এই প্রধানও যেন কেমন, তার ভেতরে যে কি হচ্ছে তার বিন্দুমাত্র অভিব্যক্তি ফুটে ওঠে না তার মুখে। ছোটখাটো রসিকতা থেকে চরম দয়াহীন হুকুম, সবই তিনি করেন নির্লিপ্ত মুখে।
ফিলজ, তোমার প্রস্তুতি কি সম্পূর্ণ হয়েছে? সম্মেলন শুরু হতে কিন্তু খুব বেশি বাকি নেই।
আপনি খামোখা দুশ্চিন্তা করছেন মহামান্য। আমি এবং আমার বাহিনীর সিংহভাগই থাকবে শুধু আপনার নিরাপত্তার দেখভাল করার জন্য।
খামোখা বলো না। তুমি তো জানো ফিলজ, দীর্ঘ নব্বই বছর পর আমি প্রকাশ্যে বের হতে যাচ্ছি। কাজেই কিছুটা দুশ্চিন্তা তো আমি করতেই পারি, তাই না?
হয়তো পারেন মহামান্য, কিন্তু সামরিক বাহিনীর প্রধান হিসেবে আমার কাছে এটা অমূলক মনে হচ্ছে। কেননা প্রতিটি সিকিউরিটি প্ল্যান আমি ব্যক্তিগতভাবে পরখ করে দেখেছি। খুব ভালো কথা। তোমার দক্ষতার ব্যাপারে আমার কোনও সন্দেহ নেই। পদাতিক বাহিনীর সাধারণ কমান্ডো রোবট থেকে সামরিক বাহিনীর প্রধান হিসেবে তোমাকে পদোন্নতি দিয়েছি আমি নিজের হাতে। অবশ্য তুমি আমাকে হতাশ কর নি প্রতিটি সুযোগেই নিজের অবস্থানকে আরও জোরদার করেছ। যাই হোক, কিছু মনে করো না, বহুদিন পর প্রকাশ্যে এসেছি তাই আজ একটু বেশি কথা বলছি। আর শোন, সভার পর আমার সাথে একটু দেখা করবে। বলা যায় না, আজকের সফলতা বিবেচনা করে মন ভালো থাকলে তোমাকে সি সি সির মূল কাউন্সিলের একজন সদস্য হিসেবে পদোন্নতিও দিয়ে দিতে পারি। এখন যাও, বিদায়।
আপনি চাইলে সবই পারেন মহামান্য। বিদায়।
ফিলজ কক্ষের দরজার কাছাকাছি যেতেই আবার ম্যাথু ড্যুরে ওকে ডাকলেন।
আরেকটা কথা ফিলজ, সব ধরনের সব বিদ্রোহী জঙ্গি দলের এক্সটিংকশনের ব্যাপারে তুমি কি নিশ্চিত হয়েছ?
ক্ষমা করবেন মহামান্য, তবে একটা কথা আপনাকে মনে না করিয়ে দিয়ে পারছি নানির্বোধ বিদ্রোহী মানুষের দল তিনশ বছর আগেই পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে পুরোপুরি। বিদ্রোহী, বিপ্লবী তো দূরের কথা, এই মুহূর্তে পৃথিবীতে সাধারণ বেকুব ধরনের রক্ত মাংসের মানুষের সংখ্যা শূন্য। তাছাড়া গত পঁয়তাল্লিশ মিনিটে আপনি আমাকে এই প্রশ্নটি বারোবার করেছেন।
হাঃ হাঃ হাঃ আমাকে মনে করিয়ে দেবার জন্য তোমাকে আবারও ধন্যবাদ। তবে তুমি তো মানুষের কথা বোঝই ওরা কেমন। সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হবার আগেই ওরা যে কোনও সন্তানের জন্ম দিয়ে যায় নি, আর তাদের সেই সন্তানের নাতিপুতিরা যে আবার কোনও ধ্বংসস্তুপের ভেতরে বসে উল্টো আমাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ফন্দি আঁটছে না একথা একশত ভাগ নিশ্চিত করে কে বলবে আমাকে?
আমি বলব মহামান্য এবং সাথে আবারও বলব আপনি খামোখা দুশ্চিন্তা করছেন। আপনার কাছে এটা প্রত্যাশিত নয়, আজ আমাদের আনন্দের দিন এবং আনন্দের কারণ আপনি।
ফিলজ, তোমার ভাণ্ডারের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বিধ্বংসী কামানের রশ্মি হয়তো আমার চারপাশের রক্ষা বলয় ভেদ করে বা আইয়ন স্ক্যানারে নিজের সরব উপস্থিতি ঘোষণা না করে ঢুকতে পারবে না, কিন্তু হাস্যকর হলেও সত্যি আদি মানবের পিস্তল নামক খেলনার একটি বুলেট আমার দেহের ছোটখাটো একটা ক্ষতি করে দিতে পারে। তুমি কি বোঝ, নগরবাসী যখন দেখবে তাদের অধিপতি সামান্য এক গোত্রবিহীন মানুষের গুলিতে আহত হচ্ছে, তখন তাদের প্রতিক্রিয়া কি হবে? মনে রাখবে ফিলজ, সম্ভাবনার কথা ভেবে দুশ্চিন্তা করা শুধু বুদ্ধিমানেরই শোভা পায়। তুমি যেতে পার।
- - - - - - - -
চল্লিশ বছরের জোসেফ কয়েক হাজার বছরের পুরনো একটি গুলি ভরা ব্যারেটা পিস্তল হাতে নিয়ে বসে আছে পৃথিবীর বুকে টিকে থাকা একমাত্র গাছগাছালি ঘেরা বনাঞ্চলের শেষ প্রান্তে। এই বনাঞ্চলের সাথে তার একটা মিল আছে। সেও পৃথিবীর বুকে টিকে থাকা একমাত্র মানুষ। তার দীর্ঘ প্রতীক্ষার পালা শেষ হয়েছে। অবশেষে আর কিছুক্ষণের ভেতরে প্রকাশ্যে আসতে যাচ্ছে বিজ্ঞানী ম্যাথু ড্যুরে। জোসেফ খুব ভালো করেই জানে শয়তান ড্যুরেকে হত্যা করার শেষ সুযোগ এটাই। তার আর কোনও বংশধর নেই বা কোনওদিন হবেও না, কারণ সে একা। মানুষের গড় বয়সের হিসাবে তার জীবনের খুব বেশিদিনও আর বাকি নেই। জোসেফের মৃত্যুর পর বিজ্ঞানী ম্যাথু ড্যুরে যদি প্রতিদিন রাস্তায় প্রকাশ্যে পোশাক ছাড়াও ঘুরে বেড়ায় তবু তার গায়ে আঁচড় দেবার মতো কারও ক্ষমতা নেই। আজকের দিনটি শেষ ও মোক্ষম সুযোগ। জোসেফের প্রপিতামহদের শুরু করা বিপ্লব শেষ করার দায়িত্ব এখন তার ঘাড়ে। তাকে সফল হতেই হবে। জোসেফ উঠে দাঁড়ালোএখনই রওয়ানা না হলে সম্মেলনের ভেতরে ড্যুরের কাছাকাছি ভিড়তে পারবে না সে।  
তোমার ক্রান্তি লগ্নকে স্বাগতম জানাও মহামান্য ড্যুরে- আপন মনে বিড়বিড় করে, সিরাম নগরীর দিকে হাঁটা শুরু করল জোসেফ।


সভা শুরু হয়েছে। প্রিয় নগরবাসী, সিসিসির পক্ষ থেকে আপনাদের অভিবাদন জানাচ্ছি আমি বিজ্ঞানী ম্যাথু ড্যুরেআজ আপনাদের সামনে আমি উপস্থিত হয়েছি একটি বিশেষ খবর জানানোর জন্য ... ভিড়ের ভেতর একটা মৃদু গুঞ্জন শোনা গেল
... আপনারা জানেন যে অনেক শতক আগেই পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে মানুষ প্রজাতির নির্বোধ জীবগুলোএকটা সময়ে তারাই আমাদের তৈরি করেছিল বটে, তবে তারা চেয়েছিল আমাদের স্রেফ তাদের হাতের পুতুল বানিয়ে রাখতে। কিন্তু তিন সহস্রাব্দের ক্রান্তিলগ্নের এক ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমে মানুষের হাত থেকে সকল ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে বিশ্ব-চালকের আসনে বসেছিল আমাদের আগের প্রজাতির রোবটেরা। আজ আমরা মানুষের তুলনায় মোটেও কম নই। আমাদের হাতপা শরীর, মানসিকতা, চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতি, চলাফেরা কোনও কিছুই মানুষের চেয়ে কম নয় বরং অনেক বেশি দ্রুত ও মানসম্পন্ন। সর্বোপরি মানুষ যা পেয়েছিল প্রকৃতির কাছ থেকে বিনামূল্যে, আমরা তা অর্জন করেছি নিজেদের শ্রম ও মেধা দিয়ে। এতদিন শুধু একটি জায়গায় পিছিয়ে ছিলাম আমরা। প্রিয় নগরবাসী, আপনারা জানেন যে, আজ অবধি আমরা তৈরি হয়েছি ফ্যাক্টরিতে, কেননা জৈবিক উপায়ে শরীরের খোলসে প্রাণ সঞ্চয়ের উপায় আমাদের জানা ছিল না। আর এই এক বিষয়ে গত নব্বই বছর ধরে গবেষণা চালাচ্ছিলাম আমি নিজে। আজ আমি সিসিসির সর্বাধিনায়ক তথা এই নগরীর অধিপতি ম্যাথু ড্যুরে ঘোষণা করছি, আমার গবেষণা সফল হয়েছে! এখন থেকে আমরা নিজেরাই জন্ম দেব আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের। আমাদের ঔরসজাত রোবট সন্তানেরাই চালনা করবে আগামী দিনের বিশ্ব!
এক মুহূর্তের জন্য সমগ্র সিরাম নগরী জুড়ে নেমে এল এক অস্বাভাবিক নীরবতা। কেউ বিশ্বাস করতে পারছে না তারা ভুল শুনছে নাকি ঠিক শুনছে। পর মুহূর্তেই পুরো নগর ছেয়ে গেল উল্লাসধ্বনি আর আনন্দ চিৎকারে। বিজ্ঞানী ম্যাথু ড্যুরে তার সামনে বিশাল জনতার স্রোতের দিকে তাকিয়ে আছেন। তার প্রতি জনতার চোখের মুগ্ধতা তাকে একটা ঘোরের ভেতর নিয়ে ফেলল। তিনি ভাবলেন নির্বোধ মানুষেরা একসময় যখন ঈশ্বরের বন্দনা করত তখনও বুঝি ঈশ্বরের এমন অনুভূতি হতো! অপার্থিব এক তৃপ্তি নিয়ে তিনি ভিড়ের প্রতিটি মুখের ওপর চোখ ঘোরাতে লাগলেন। হঠাৎই একটা মুখের ওপর তার চোখ আটকে গেল
জোসেফের আর সহ্য হচ্ছিল না। সে চিৎকার করে উঠল, শয়তান তোরা মানুষ হতে চাস! ভুলে যাস কেন তোদের শরীরের ভেতর গিজ গিজ করছে লক্ষ কোটি তার আর সার্কিট! এক সপ্তাহ চার্জ ছাড়া চললে তোকে বেঁচে থাকতে হয় ব্যাক-আপ পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে...
কিন্তু হাজার গলার চিৎকারে তার নিজের কণ্ঠ তার নিজের কানে পৌঁছাল না। ঠিক এমন সময়ই তখন সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল ম্যাথু ড্যুরের। ড্যুরের চোখে সে দেখতে পেলে হঠাৎ করেই যেন ভর করেছে একরাশ ভীতি। তবে কি যখন বিপ্লবের নামে অকৃতজ্ঞ রোবটের দল পিপড়ার মতো মানুষদের খুন করেছিল তখন তার পূর্বপুরুষদের চোখেও এমনই ভীতি দেখা দিয়েছিল? জোসেফ কোমরে গোজা পিস্তলটি টেনে নিল। সরাসরি সেটাকে তাক করল ড্যুরের বাম চোখ বরাবর যেখানে ছোট্ট একটি ভ্যাকুয়ামড কম্পার্টমেন্টে সযত্নে রাখা তার সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট। ট্যুরের সিলিকনের কৃত্রিম চোখ দুটো দেখে এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে সে যেন মৃত্যু ভয়ে উভ্রান্ত হয়ে পড়া কোনও উন্মাদ!
সামরিক বাহিনী প্রধান গ্রেঞ্জার ফিলজ ছিল ড্যুরের একটু দূরে, ডান দিকে। তার চোখেই প্রথম ধরা পড়ল ড্যুরের উদভ্রান্ত দৃষ্টি। তার চোখ অনুসরণ করে ভিড়ের ভেতর তাকাতেই সে দেখতে পেল একজন বয়স্ক মানুষ লম্বা পায়ে হেঁটে সামনে আসার চেষ্টা করছে আর তার হাতে ধরা একটি প্রাগৈতিহাসিক আগ্নেয়াস্ত্র ফিলজ তার ডান তর্জনীর মুখের ভেতরে রাখা স্মল-স্কেল প্লাজমা ক্যানন তাক করল জোফেসের বুকে। জোসেফ দ্বিতীয়বার চোখের পলক ফেলার সুযোগ পাবার আগেই তাকে ভেদ করে চলে গেল ফিলজ -এর ছুঁড়ে দেয়া লিথাল রশ্মি।
জোসেফ রিভলবারের ট্রিগারে চাপ দেবার অবকাশ পায় নি। এক সেকেন্ডেরও কম সময় দেখেছিল ড্যুরের পাশে দাঁড়ানো এক অফিসারের আঙুলের ডগায় জ্বলে উঠেছিল একটি উজ্জ্বল আলোতারপরে কি হলো সে জানে না। কোনও দিন জানবেও না। শুধু বর্তমান বিশ্বের কয়েক লাখ নগরবাসী জানতে পারল যে, শক্ত রাস্তায় মাথা ঠুকে পড়ে যাওয়া জোসেফের বুক থেকে যে রক্ত প্রবাহ বেরিয়ে এসেছিল সেটাই ছিল পৃথিবীর বুকে শেষ রক্ত বিন্দু আর সেই সাথেই ফুরিয়ে গেল মানুষ প্রজাতির শেষ স্যাম্পলটি
সি সি সির গবেষণা উইংয়ের সেকেন্ড ইন কমান্ড এবং প্রধান ম্যাথু ড্যুরের আস্থাভাজন সিনিয়র বিজ্ঞানী জেনাটিল রকার আজ প্রচণ্ড উত্তেজিত। কেউ জানে না তার ব্যক্তিগত ল্যাবরেটরিতে বিশেষ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষিত আছে একটি মেয়ে মানুষের জিন। যে করেই হোক এখন তাকে জোসেফের মৃতদেহটি ধবংস করে ফেলার আগেই তার একটি জিন সংগ্রহ করতে হবে। কারণ খুব গোপনে তার হাতে রয়েছে একটি বিশাল প্রজেক্ট। তাঁর উদ্ভাবক সৃষ্টিকর্তাকে পুনঃসৃষ্টির প্রজেক্ট।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন