মহাকাশযান মহাশূন্যে উল্টো হয়ে ওড়ে কেন |
মহাকাশযান মহাশূন্যে উল্টো হয়ে ওড়ে কেন?
লক্ষ করলে দেখা যাবে মহাকাশযান বা ‘স্পেস শাটল’ মহাশূন্যে উল্টো অবস্থায় থাকে, অর্থাৎ এর পেটের দিকটা থাকে ওপরের দিকে আর পিঠের দিকটা থাকে পৃথিবীর দিকে। ভেতরের মহাশূন্যচারীদেরও মাথা থাকে নিচের দিকে আর পা ওপরের দিকে। এর কারণ হলো মহাশূন্যযানের পেটের দিকটা শক্ত ও পুরু টাইলসে তৈরি করা হয়। এটা ওপরের দিকে থাকার সুবিধা দুটি। প্রথমত মহাশূন্যে কোনো বাতাস না থাকায় সূর্যরশ্মির প্রচণ্ড তাপ শুষে নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা থাকে না, ফলে সেটা সরাসরি গিয়ে পড়ে মহাশূন্যযানের ওপর। তাপ প্রতিরোধক টাইলসগুলো নভোখেয়াযানকে এই তাপের হাত থেকে বাঁচায় এবং ভেতরের মহাশূন্যচারীদের রক্ষা করে। দ্বিতীয়ত মহাশূন্যে অনেক উল্কাপিণ্ড, পাথর প্রভৃতি প্রচণ্ড গতিতে ঘুরে বেড়ায়। মাঝেমধ্যে এগুলো পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে কিন্তু বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে পৃথিবীতে পড়ার আগেই এদের অধিকাংশ জ্বলেপুড়ে শেষ হয়ে যায়। মহাশূন্যে তো বাতাস নেই। তাই মহাকাশের ওইসব আবর্জনার সঙ্গে সংঘর্ষ হলে যেন ভেঙেচুরে না যায় বা সংঘর্ষের তাপে গলে না যায় সেজন্য মহাকাশযানের পেটের দিকের পুরু ও শক্ত দিকটা ওপরের দিকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। শাটলযানটি পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার সময় তার গতি ধীর করা হয়। এ সময় মহাশূন্যযানের পেছন দিকটা উল্টে যায়, যেন পৃথিবীর দিকে ফিরে আসার সময় বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে সৃষ্ট প্রচণ্ড তাপ সহ্য করা সম্ভব হয়। এখানে মনে রাখা দরকার, মহাশূন্যে কোনো মধ্যাকর্ষণ শক্তি কাজ করে না। তাই মহাশূন্যচারীদের মাথা নিচে না ওপরে সেটা তারা বুঝতে পারেন না, মহাশূন্যে উল্টো হয়ে ঘুরলেও তাঁদের কোনো অসুবিধা হয় না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন