মৌমাছি ঝাঁক বেঁধে আসে কেন? |
মৌমাছি ঝাঁক বেঁধে আসে কেন?
সকাল বেলা পাউরুটিতে মধু মাখিয়ে খেতে খেতে কখনো কি আমাদের মনে হয়েছে যে, প্রায় পঁয়ষট্টি হাজার ফুলের মধু থেকে তৈরি হয় মাত্র পাঁচশো গ্রাম খাবার মধু?
এই পাঁচশো গ্রাম মধু তৈরি করতে পঞ্চাশ হাজার কর্মঠ-মৌমাছি ব্যস্ত। প্রতিটি কর্মী-মৌমাছিকে এর জন্যে পঁচাত্তর বার যাতায়াত করতে হয়েছে। তাছাড়া মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে কত লোক যে মৌমাছির কামড়ে মারা গেছে তা বলে শেষ করা যায় না। মৌচাক ভাঙার আগেই ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি মৌ-চোরদের ঘিরে ধরে। মৌমাছি যখন আক্রমণ করে তখন তারা ঝাঁক বেধে আসে কেন?
একটি মৌচাকে অসংখ্য মৌমাছি বাস করে। এদের মধ্যে কর্মী-মৌমাছিরাই মধু সংগ্রহ করে। কিছু কিছু কর্মী-মৌমাছি আবার মৌচাকের আশপাশে উড়ে বেড়ায়। এরা মৌচাককে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্যে পাহারা দেয়। স্বাভাবিক কারণেই কোনো লোক দেখলে কর্মী-মৌমাছি তাকে শত্রু মনে করে তেড়ে আসে এবং শত্রু পালিয়ে যাবার আগেই মৌমাছি তার গায়ে হুল ফুটিয়ে দেয়। মৌমাছির পেরেকের মতো হুল চামড়ার ভেতরে ঢুকে যায়। হুলের গায়ের পেছনেই থাকে বিষভরা ছোট থলি। একবার হুল ফোটালে সে আর তা বের করে নিয়ে আসতে পারে না। টানাটানিতে হুলের সঙ্গে বিষের থলিও মৌমাছির শরীর থেকে বেরিয়ে আসে। বিষের থলির সঙ্গে যে পেশি থাকে তা সংকোচনে থলি থেকে বিষ বেরিয়ে লোকটির চামড়ার ভেতরে ঢুকে পড়ে। মৌমাছির বিষে হিস্টামিন, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ফসফোলাইপেজের মতো এনজাইম থাকে। এর সঙ্গে মেলিট্টিন নামে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থও পাওয়া যায়। মেলিটিন থাকবার জন্যই মৌমাছির কামড়ে চামড়া ফুলে ওঠে এবং জ্বালা ধরে। মৌমাছির বিষের থলি থেকে যে শুধুই বিষ বেরোয়, তা নয়। বিষের সঙ্গে এক ধরনের আতরের মতো জিনিস শরীরে ঢুকে পড়ে। একে বলে ফেরোমেন। হাওয়া লাগলেই বাতাসে মিলিয়ে যেতে থাকে। হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে ফেরোমোনের গন্ধ গিয়ে পৌঁছায় কাছাকাছি মৌচাকে। সেই গন্ধ পেয়ে মৌচাক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি বেরিয়ে এসে মৌ-চোরের দিকে ধেয়ে যায়।
Tags: প্রশ্নঃ মৌমাছির হুলে কি থাকে?, মৌমাছির কামড়ে মৃত্যু
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন