নিষ্ক্রিয় গ্যাস আবিষ্কার ও স্যার উইলিয়াম র্যামজে - Discovery of inert gas - নিষ্ক্রিয় গ্যাস কাকে বলে - নিষ্ক্রিয় গ্যাস কতটি ও কি কি |
নিষ্ক্রিয় গ্যাস আবিষ্কার ও স্যার উইলিয়াম র্যামজে - Discovery of inert gases (Noble Gases)
প্রায় দুশ বছর আগে পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল বাতাসে হাইড্রোজেন, কার্বনডাই অক্সাইড, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন এই চার ধরনের গ্যাস আছে। ১৭৮৫ সালে বিজ্ঞানী ক্যাভেণ্ডিস (Henry Cavendish) বায়ুমণ্ডলের সর্বত্র নাইট্রোজেনের পরিমাণ সমান কিনা তা পরীক্ষার জন্য গবেষণা শুরু করলেন। এই পরীক্ষা চালানোর সময় একবার কস্টিক সোডা (NaOH - Sodium hydroxide, also caustic soda) দ্রবণের ওপর অতিরিক্ত অক্সিজেনযুক্ত বায়ু প্রবেশ করিয়ে তাতে বার বার বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গ প্রয়োগ করে বাড়তি অক্সিজেনকে পটাশিয়াম সালফাইড (Potassium sulfide - K2S) দিয়ে শোষণ করিয়ে একটি গ্যাসের সন্ধান পেলেন। এই গ্যাসের পরিমাণ মূল বায়ুর ১২০ ভাগের এক ভাগ মাত্র ছিল। পরীক্ষা করে দেখা গেল গ্যাসটি নাইট্রোজেনের থেকেও বেশী নিষ্ক্রিয়। কিন্তু গ্যাসটিকে তিনি নানা পরীক্ষা করেও সনাক্ত করতে পারেননি। এরপর কেটে গেছে ১০০ বছর।
নিষ্ক্রিয় গ্যাস আবিষ্কার ও স্যার উইলিয়াম র্যামজে - Discovery of inert gas - নিষ্ক্রিয় গ্যাস কাকে বলে - নিষ্ক্রিয় গ্যাস কতটি ও কি কি - নিষ্ক্রিয় গ্যাস মিম
১৮৯৪ সালে বিজ্ঞানী র্যালে (John William Strutt, 3rd Baron Rayleigh) গ্যাসীয় পদার্থগুলোর ঘনত্ব নির্ণয় করতে গিয়ে দেখলেন রসায়নাগারে প্রস্তুত নাইট্রোজেন ও বায়ুমণ্ডলের থেকে পাওয়া নাইট্রোজেনের ঘণত্ব এক নয়। র্যালে এই বিষয়ে বারবার পরীক্ষা করলেন, কিন্তু ফল হল একই। তখন তিনি ধারণা করলেন বায়ুমণ্ডলে অজানা কিছু গ্যাস আছে।
র্যালের গবেষণার সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন বিজ্ঞানী র্যামজে (Sir William Ramsay)। তাঁরা দুজনে আলাদাভাবে বহু পরীক্ষা চালাতে লাগলেন। শেষপর্যন্ত বিজ্ঞানী র্যামজে এই নতুন গ্যাসটির সন্ধান পেলেন, গ্যাসটির নিষ্ক্রিয়তার জন্য নাম দেওয়া হল আর্গন বা অলস গ্যাস।
নিষ্ক্রিয় গ্যাস আবিষ্কার ও স্যার উইলিয়াম র্যামজে - Discovery of inert gas - নিষ্ক্রিয় গ্যাস কাকে বলে - নিষ্ক্রিয় গ্যাস কতটি ও কি কি - নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিলিয়াম
আর্গন আবিষ্কারের বহু দিন আগে বিজ্ঞানীরা পূর্ণ সূর্যগ্রহণের সময় বর্ণালী পরীক্ষা করতে গিয়ে হালকা হলদে রেখা দেখতে পান। বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই গ্রামের বর্ণালী সৌর আবরণেই দেখা যায়। পৃথিবীতে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। গ্রীক ভাষায় সূর্যের হেলিওস নামানুসারে (বর্ণালী দেখে বুঝতে পারা) এই গ্যাসের নাম রাখা হয় হিলিয়াম।
বিজ্ঞানী হিলডেব্র্যাণ্ড (Joel Henry Hildebrand) প্রথম ইউরেনিয়াম খনিজে (ক্লিভাইট - Cleveite) এই ধাতুর অস্তিত্বের কথা ঘোষণা করেন। ১৮৯৫ সালে বিজ্ঞানী কাইজার বায়ুতে নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিসাবে এর অস্তিত্ব প্রমাণ করেন।
নোবল গ্যাস - নিষ্ক্রিয় গ্যাস নিয়ন
বিজ্ঞানীরা বায়ুর মধ্যে আরো কোনো গ্যাসের অস্তিত্ব আছে কিনা তা খুঁজে দেখার জন্য তরল বায়ুকে নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন এবং তরল বায়ুকে অংশ পাতিত করে কয়েকটি নিষ্ক্রিয় গ্যাসের সন্ধান পেলেন। একটির নাম দিলেন নিয়ন বা নতুন গ্যাস, একটির নাম ক্রিপটন বা গুপ্ত গ্যাস এবং আরেকটির নাম জেনন বা আগন্তুক গ্যাস। শেষপর্যন্ত ১৯১৮ সালে তেজস্ক্রিয়তার ফলে ক্ষয়জাত পদার্থ থেকে রেডন, থোরন১ (Thoron) ও একটি নন গ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছ। এই নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলি কোনো মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের সঙ্গে বিক্রিয়া করে না, কারণ এদের প্রত্যেকের পরমাণুর বাইরের শেলে আটটি ইলেকট্রন দিয়ে পূর্ণ থাকে। বাতাসে এগুলি অতি অল্প পরিমাণে পাওয়া যায়।
১। থোরন: রেডিয়ামের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন