নিকোলা টেসলা এবং তাঁর পৃথিবী কাপানো আবিষ্কার ও উদ্ভাবনসমূহ - Nicola Tesla and his inventions
নিকোলা টেসলা এবং তাঁর পৃথিবী কাপানো আবিষ্কার ও উদ্ভাবনসমূহ - Nicola Tesla and his inventions
১৮৫৬ সালের ৯ জুলাই, মাঝরাত। প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টির মধ্যে জন্ম হলো একটি শিশুর। সার্বিয়ার সেই গ্রামে তখন ঘুটঘুটে অন্ধকার। বিদ্যুচ্চমকের সাথে ভীষণ জোরে একটা বাজ পড়ল, আর তার পরে পরেই কেঁদে উঠল শিশুটি। ধাত্রী ভয় পেয়ে বললেন, বাচ্চার জন্মের সময়ে এ রকম ঝড়বৃষ্টি হওয়াটা খুবই খারাপ, অলক্ষুনে ব্যাপার।
কিন্তু মা? মা বললেন, না, আমার ছেলে পুরো বিশ্বকে আলোকিত করবে। বিদ্যুচ্চমকের মধ্যে জন্মানো এই শিশুটির নাম নিকোলা টেসলা (Nikola Tesla)। আধুনিক বিশ্বকে বিদ্যুৎশক্তির নানা প্রয়োগ দিয়ে আলোকিত ও চমকিত করতে যার অবদান অবিস্মরণীয়। আধুনিক বিশ্বের সর্বত্র যে অল্টারনেটিং কারেন্ট বা এসি বিদ্যুৎ বিতরণব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, আপনার-আমার বাড়ির বিদ্যুতের লাইন যেভাবে এসেছে, সেটা এই টেসলারেরই আবিষ্কার।
শিশু প্রতিভা
বিশ্বের সেরা প্রকৌশলীদের মাঝে টেসলা যে স্থান করে নেবেন, খুব ছোটবেলাতেই পাওয়া যাচ্ছিল তার আভাস। বয়স যখন পাঁচ, টেসলা। তখন ঘোষণা দিলেন, পানির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তিনি বানাবেন একটা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র। আর দিন দুয়েক যন্ত্রপাতি নিয়ে নাড়াচাড়া করে ঠিকই বানিয়ে ফেললেন পানির প্রবাহ দিয়ে চলা একটা ডিম ফেটানোর মেশিন। এক পাশে পানি ঢেলে দিলে সেই পানি পড়ার সময়ে একটা চাকাকে ঘোরাত, আর সেই চাকার ঘূর্ণনেই চলত মেশিনটা। সবাই দেখে চমকৃত হয়ে গেল। কেবল তাই না, নয় বছর বয়সে এই ডিম ফেটানোর যন্ত্রটাকে আপগ্রেড করে দিলেন টেসলা। এবার পানির বদলে একঝাক গুবরেপোকা দিয়ে চালানোর ব্যবস্থা করলেন।
অবশ্য প্রখর মেধা আর গাণিতিক প্রতিভার জন্য টেসলা শৈশবে একবার ঝামেলায়ও পড়ে গিয়েছিলেন। দশ বছর বয়সে টেসলা গণিতে এত দক্ষ হয়ে গেলেন যে স্কুলের পরীক্ষার সব অঙ্ক অন্যদের অর্ধেক সময়ে সঠিকভাবে করে ফেলতেন। স্কুল টিচারদের সন্দেহ হলো। নির্ঘাত এই ছেলে নকল করছে। না হলে কী করে এত দ্রুত সব সমস্যার সমাধান করছে?
ডেকে পাঠানো হলো টেসলাকে। স্কুলের হেডমাস্টারের টেবিলে সবার সামনে তাকে খুব কঠিন অঙ্ক করতে দেওয়া হলো। সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে টেসলা একই দ্রুততার সাথে অঙ্কগুলোর সমাধান করে দেখালেন। সবাই বুঝল, এক ক্ষণজন্মা প্রতিভা তাদের এই ছাত্রটি। জীবনে সে যাবে বহুদূর।
জুয়াড়ি টেসলা
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন টেসলা। পড়াশোনায় অসম্ভব ভালো করতে লাগলেন। তার জন্য অবশ্য খাটুনিও করতেন অনেক, প্রতিদিন ভোর ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পড়াশোনা করতেন। সবাই যেখানে প্রথম বছরে ৪টার বেশি কোর্স নিত না, সেখানে টেসলা ৯টা কোর্স শেষ করে ফেললেন এক বছরেই, আর প্রতিটিতে পেলেন সর্বোচ্চ নম্বর।
এত বেশি পরিশ্রম দেখে প্রফেসররা ভয়ই পেয়ে গেলেন, বেশি কাজ করে ছেলেটা মারা যায় কি না। দ্বিতীয় বছরের শেষের দিকে এসে টেসলা পড়লেন মহা বিপদে। বৃত্তিটা বন্ধ হয়ে গেল। পড়াশোনার খরচ কীভাবে চালাবেন? পেয়ে বসল জুয়ার নেশা। ৩য় বছরের শুরুর দিকে এমনকি ভরণপোষণের টাকা যা বাসা থেকে পেতেন, তাও খরচ করে ফেললেন জুয়ার নেশায়। এরপর সংবিৎ ফিরে পেলেন—ঠিক করলেন বাড়ি থেকে নেওয়া টাকাটা জুয়া খেলেই উদ্ধার করে ছাড়বেন। আর সেটা করেও ছাড়লেন। শপথ নিলেন, জীবনেও আর জুয়া খেলবেন না। কিন্তু এসব করতে গিয়ে পড়াশোনা লাটে উঠেছে। শেষ পরীক্ষাটায় তাই পাস করতে পারলেন না টেসলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পেতে একটা পরীক্ষাই বাকি। কিন্তু লজ্জায় অপমানে টেসলা আর ফিরে গেলেন না। আর অভিমান করে বাড়ি থেকেও গেলেন পালিয়ে। সবাই ভাবল, পানিতে ডুবে মারা গেছেন টেসলা। কয়েক মাস পরে তার বাবা খুঁজে পেলেন টেসলাকে আরেক শহরে। সেখানে নকশা করার কাজ করছেন তিনি। অনুরোধে বাড়ি ফিরলেন না, পুলিশ দিয়ে ধরে বেঁধে আনতে হলো তাকে বাড়িতে।
১৮৮০ সালে তিনি গেলেন প্রাগের চার্লস-ফার্দিনান্দ বিশ্ববিদ্যালয়ে, কিন্তু দেরি করে যাওয়া আর গ্রিক ও চেক ভাষা না জানায় ভর্তি হতে পারলেন না। টেসলার প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার সমাপ্তি হলো সেখানেই। কিন্তু এই বিশ্ব যার পাঠশালা, তাকে কি আর আটকে রাখা যায়? টেসলা এবার নেমে পড়লেন কর্মক্ষেত্রে, শুরু করলেন তার জাদুর ছোঁয়া।
তড়িতের জাদুকর টেসলার ক্যারিয়ার শুরু হয় বুদাপেস্টের টেলিফোন এক্সচেঞ্জে। সেখানে কিছুদিন কাজ করার পরে যোগ দিলেন প্যারিসের অ্যাডিসন ইলেকট্রিক কোম্পানিতে। কাজেকর্মে তার দক্ষতা টের পেয়ে কয়দিন পরেই আমেরিকায় অ্যাডিসন কোম্পানির নিউইয়র্ক শাখায় পাঠানো হলো তাকে। ইলেকট্রিক জেনারেটর আর লাইট বানানো ও মেরামত করার দক্ষতায় সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন। কোম্পানির মালিক ছিলেন আরেক বিখ্যাত উদ্ভাবক টমাস আলভা অ্যাডিসন। শোনা যায়, অ্যাডিসন কিংবা তার কোম্পানির অন্য কোনো বড়কর্তা নাকি টেসলাকে অনেকগুলো যন্ত্র উদ্ভাবন ও মানোন্নয়নের বদলে ৫০ হাজার ডলার পুরস্কার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। টেসলা সবগুলো কাজ ভালো করে শেষ করার পরে যখন পুরস্কার চাইলেন, তখন তাকে বলা হলো, পুরস্কার দেওয়ার ব্যাপারটা ঠাট্টা করে বলা হয়েছিল। লিখিত চুক্তিনামা নাই কাজেই পুরস্কারও পাবেন না কোনো। রাগে-দুঃখে টেসলা ছয় মাসের মাথায় তাই চাকরিটা দিলেন ছেড়ে। এবারে শুরু করলেন নিজের কোম্পানি, আর বিদ্যুতের নানা বিষয় নিয়ে একের পর এক অত্যাশ্চর্য সব উদ্ভাবন।
টেসলার এই নতুন উদ্ভাবনগুলো কী, একে একে দেখা যাক।
অল্টারনেটিং কারেন্ট বা এসি বিদ্যুৎ: আমাদের ঘরে ঘরে তড়িৎ সরবরাহে যে ধরনের প্রবাহ ব্যবহার করা হয় তা হলো অল্টারনেটিং কারেন্ট (Alternating Current) বা পরিবর্তী প্রবাহ। ব্যাটারির বিদ্যুৎ হলো ডিসি বা ডাইরেক্ট কারেন্ট, সেখানে বিদ্যুৎ কেবল এক দিকে প্রবাহিত হয়। আর এসিতে বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক প্রতি সেকেন্ডে ৫০ থেকে ৬০ বার পাল্টায়। ছোট যন্ত্রাংশের জন্য ডিসি ভালো কাজ করে, কিন্তু ঘরবাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্যে বা বহু দূরে বিদ্যুতের লাইন দিয়ে সরবরাহ করতে হলে এসির কোনো বিকল্প নেই। টেসলা এসি আবিষ্কার করেননি বটে কিন্তু এসি বিদ্যুৎ প্রবাহ এবং সেই বিদ্যুৎ নানা জায়গায় সরবরাহ করার যে সিস্টেম বর্তমানে বিশ্বের সর্বত্র ব্যবহৃত হয়, সেটা টেসলার হাতেই গড়। খুব উচ্চ কম্পাঙ্কের এসি প্রবাহ দিয়ে টেসলা তৈরি করেছিলেন টেসলা কয়েল, যা দিয়ে ল্যাবে বসেই বজ্রপাতের মতো বিদ্যৎ চমক বা আর্ক তৈরি করা সম্ভব।
ইন্ডাকশন মোটর: আপনার বাসার সিলিং ফ্যানটা দেখছেন? সেটাতে যে মোটর ব্যবহার করা হয়, তার নাম ইন্ডাকশন মোটর। আর সেটার আবিষ্কারকও টেসলা। এ রকমের মোটর কাজেকর্মে অনেক সুদক্ষ, আর আকারেও অনেক ছোট হয়।
প্রথম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র: নায়াগ্রা ফলসের বিশাল জলপ্রবাহকে কাজে লাগিয়ে টেসলার নকশায় তৈরি হয় বিশ্বের প্রথম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
রেডিও : বেতার বা রেডিওর আবিষ্কারক হিসেবে মার্কনির নাম সবাই জানলেও আসলে বেতার তরঙ্গ নিয়ে টেসলা অনেকগুলো কাজ করে গেছেন। মার্কনির আগেই তিনি বেতার তরঙ্গ দিয়ে রিমোট কন্ট্রোল জাহাজ বানিয়ে দেখিয়েছিলেন। রেডিওর পেটেন্ট নিয়ে টেসলা ও মার্কনির মধ্যে বিবাদ চলেছে বহুদিন। অর্থাভাবে মামলাটা ভালো করে চালাতে পারেননি টেসলা, তবে ১৯৪৩ সালে আদালতে রায় দেওয়া হয়, টেসলাই রেডিওর উদ্ভাবক, মার্কনি নন।
তারবিহীন বিদ্যুৎ সরবরাহ : এখনকার সময়ে মোবাইল ফোনের ওয়্যারলেস চার্জার পাওয়া যায় বাজারে, যা দিয়ে চার্জারে না যুক্ত করেও মোবাইল ফোন চার্জ করা সম্ভব। অথচ এই প্রযুক্তিটি আসলে টেসলা উদ্ভাবন করেছেন সেই ১৯০১ সালেই।
টেসলার উদ্ভাবনের কথা বলে শেষ করা যাবে না। সারা জীবনে মোট ৩০০টিরও বেশি উদ্ভাবন পেটেন্ট করেছেন টেসলা। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে অদ্ভুত ছিল একটি অত্যাশ্চর্য যন্ত্র। সেটার গল্পটাই শোনা যাক—১৮৯৮ সালে নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে হঠাৎ করে হলো বিশাল শক্তিশালী ভূমিকম্প। কয়েকটি ভবন এত জোরে কাঁপতে শুরু করল যে, মনে হলো ভেঙে পড়বে। একটু পরে থেমেও গেল, কিন্তু দেখা গেল ভূমিকম্পটা হয়েছে ওই অল্প কয়েকটি ভবনেই, অন্য কোথাও না। কিন্তু এই ভূমিকম্প এল কোথা থেকে? আসলে ১৮৯৩ সালে টেসলা বানিয়েছিলেন বাষ্পচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন যন্ত্র টেসলা অসিলেটর, যাতে বাষ্পের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা যেত। এই যন্ত্রটি খুব জোরে কাপত চালানোর সময়ে। ১৮৯৮ সালে টেসলা কাজ করছিলেন ম্যানহাটানে তার ল্যাবে। ছোট্ট একটি অসিলেটর একটি ভবনের দেয়ালে লাগিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছিলেন। সেটা এত দ্রুত কাপল আর ভবনে অনুরণনের সৃষ্টি করল যে ভয়াবহভাবে। কাঁপতে থাকল ভবনটি। ভেঙে পড়ার উপক্রম হলো। টেসলা বুঝলেন আর অল্প পরেই আসলে ধসে পড়বে ভবনটি। তাই হাতুড়ি দিয়ে বাড়ি মেরে ভেঙে ফেলতে বাধ্য হলেন এটি।
চিত্র ২২: টেসলা কয়েল হাতে বিখ্যাত সাহিত্যিক মার্ক টোয়েন (১৮৯৪)
টেসলার ছিল মহা মহা সব পরিকল্পনা। অনেকগুলো অদ্ভুত গবেষণা শেষ করতে পারেননি। একবার পরিকল্পনা করেছিলেন, মানুষের মনের চিন্তাভাবনাকে টেলিভিশনের স্ক্রিনে ফুটিয়ে তোলার মতো একটা যন্ত্র বানাবেন। তা দিয়ে যে কারও মনের ভেতরের সব চিন্তাভাবনা বের করে বইয়ের মতো করে পড়া যাবে। টেসলা অনেক দিন ধরেই কাজ করেছিলেন তারবিহীন বিদ্যুৎ সরবরাহ বানানোর। বিশাল টাওয়ার থেকে রেডিও তরঙ্গ যেমন চারদিকে ছড়িয়ে যায়, তেমনি বিদ্যুৎশক্তিও চারদিকে পাঠানো হবে। টেসলা এমনকি এটাও ভেবেছিলেন যে এই তারবিহীন বিদ্যুৎ সরবরাহকে কাজে লাগিয়ে বানাবেন বৈদ্যুতিক প্লেন, যার শক্তি আসবে এই তারবিহীন বিদ্যুৎশক্তিকে আহরণ করে। অনন্তকাল সেই প্লেনগুলো আকাশে পারবে উড়তে। তবে টেসলার সবচেয়ে অদ্ভুত উদ্ভাবণের পরিকল্পনা ছিল ডেথ রে বা মারণরশ্মি বানানো। টেসলার ইচ্ছা ছিল, এমন রশ্মি বানাবেন যেটা দিয়ে কয়েক শ মাইল দূর থেকে শত্রুর ওপরে হামলা চালানো যাবে। আধুনিক সায়েন্স ফিকশনে স্পেসশিপগুলো যুদ্ধ করে যেভাবে লেজার গান দিয়ে, টেসলারও স্বপ্ন ছিল সে রকম বানাবেন। তবে অর্থাভাবেই হোক অথবা প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতার কারণেই হোক, টেসলার এই পাগলাটে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবে রূপ নেয়নি। কিন্তু এগুলোর কারণেই টেসলা খেতাব পেয়েছেন পাগল বৈজ্ঞানিক হিসেবে।
টেসলা বেঁচে ছিলেন ৮৬ বছর বয়স পর্যন্ত, ১৯৪৩ সালের ৭ জানুয়ারি নিউইয়র্কের একটি হোটেলে চরম দারিদ্র্যের মাঝে মারা যান টেসলা। সারা জীবন বিয়ে করেননি। কাজপাগল মানুষটা ঘুমাতেন রাতে মাত্র ২ ঘণ্টা। টেসলার ছিল ফটোগ্রাফিক মেমরি—কিছু একবার দেখলে ভুলতেন না। যেকোনো যন্ত্র নকশা করতেন মনে মনেই। কাগজ-কলমে খসড়া করা লাগত না। বিদ্যুৎশক্তিকে মানবজাতির হাতের মুঠোয় এনে দেওয়া এই মানুষটির কাছে মানবসভ্যতা চিরঋণী হয়ে থাকবে, তখনো, এখনো এবং আরও বহুকাল। বজ্রবৃষ্টির রাতে জন্ম নেওয়া টেসলার মুখ দেখে মা যেমন বলেছিলেন, এই ছেলে বিশ্বে আলো এনে দেবে, সারা জীবনের নানা কাজের মাধ্যমে টেসলা মায়ের সেই কথাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন।
বিদ্যুতের জাদুকর টেসলার তেজ আজও তাই অম্লান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন