শয়তানের গাছ বা ছাতিম গাছ – বৃক্ষের কথা – হুমায়ূন আহমেদ - Chatim Gach – Shoytaner Gach – Brikkher kotha – Humayun Ahmed |
শয়তানের গাছ বা ছাতিম গাছ – বৃক্ষের কথা – হুমায়ূন আহমেদ - Chatim Gach – Shoytaner Gach – Brikkher kotha – Humayun Ahmed
আমার খুব পছন্দের একটা গাছের ইংরেজি নাম Devil's tree, শয়তানের বৃক্ষ। এত সুন্দর একটা গাছের নাম শয়তানের বৃক্ষ হবার পেছনের কোনো কারণ আমি বের করতে পারি নি। নামের উৎপত্তি বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারে না।
বাংলা নাম এসেছে ছাতা থেকে। ডাল থেকে বের হওয়া পাতাগুলির এমনই অপূর্ব বিন্যাস, দেখে মনে হয় কিছু ছাতা জোড়া দেয়া হয়েছে। গাছটার আরেক নাম সপ্তপর্ণী। একই গ্রন্থি থেকে সাতটা পাতার বিন্যাসের জন্যেই সপ্তপর্ণী নাম। এর আরেক নাম মদগন্ধ। কারণ হচ্ছে, যখন এই গাছে ফুল ফোটে (শরৎকাল) তখন ফুল থেকে নেশা ধরানো তীব্র গন্ধ বের হয়। এই গন্ধের ভেতর দীর্ঘসময় থাকলে মানুষ সত্যি সত্যি নেশাগ্রস্ত হয় এমন জনশ্রুতি আছে।
নুহাশ পল্লীর মূল বাংলোর সামনে দুটা ছাতিম গাছ লাগানো হয়েছে। গাছ দু'টি দ্রুত বড় হচ্ছে। আমি ফুল ফোটার জন্যে অপেক্ষা করছি। ফুল ফুটলেই ফুলের গন্ধে নেশা করার পরিকল্পনা আছে।
গাছটির বোটানিক্যাল নাম Astonia scholars। পরিবার এপাসাইন্যাসী।
ছাতিম গাছ এর ঔষধি গুণাগুণ ও ব্যবহার
প্রাচীন আয়ুর্বেদিক গ্রন্থ চরক সংহিতায় ছাতিম গাছের ব্যবহার দেখানো হয়েছে কুষ্ঠরোগে। কুষ্ঠরোগের এখন অতি আধুনিক চিকিৎসা বের হয়েছে, কাজেই প্রাচীন আয়ুবেদ নিয়ে হৈচৈ করার প্রয়োজন দেখছি না।
স্তন্য শোধনে ছাতিমের ব্যবহারের উল্লেখ প্রাচীন বইয়ে আছে। স্তন শোধন বিষয়টা আমি বুঝতে পারছি না। প্রাচীন আয়ুর্বেদরা কি Brest cancer এর কথা বলছেন?
রসায়ন
ছাতিম গাছ থেকে অনেক এলকালয়েড (নাইট্রোজেনগঠিত যৌগ) পাওয়া গেছে। যেমন-- এসিটামাইসিন, পিক্রিনিন, পিক্ৰান্সিনাল, স্টিষ্টামিন, একুয়াশ্মির্ডিন। ছাতিম গাছের ফুলে আছেn-হেক্সাকোসেল, লুপিরল, বিটা এমিরিন। ফুল থেকে আসা তীব্র মদালসা গন্ধের জন্যে কে দায়ী জানা যাচ্ছে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন