মাকাল ফল - বৃক্ষের কথা - হুমায়ূন আহমেদ - makal fol - Humayun Ahmed |
মাকাল ফল - বৃক্ষের কথা - হুমায়ূন আহমেদ - Makal fol - Humayun Ahmed
এদেশের বেশিরভাগ রূপবান ছেলেকে ‘ব্যাটা মাকাল ফল’ ধরনের গালি শুনতে হয়েছে। পাকা মাকালের ভুবনমোহিনী রূপ। গুণ কিছুই নেই। বিষাক্ত ও তিক্ত। এই ফল ঝোপঝাড় আলো করে বসে থাকে। মানব সম্প্রদায়ের কেউ তার কাছে যায় না, তবে পাখিরা যায়।
মাকালকে অনেকে তেলাকুচাও বলেন। এটা ভুল। একই পরিবারের হলেও মাকাল আপেলের মতো গোল। তেলাকুচা কাঁচা অবস্থায় অবিকল পটলের মতো। পাকলে টকটকে লাল। তেলাকুচায় বারোমাসই ফুল ফোটে ফল ধরে।
বৈজ্ঞানিক নাম Coccinia cordifolia cogn, পরিবার Cucurbitaceae
নুহাশ পল্লীতে মাকাল ফলের কোনো গাছ নেই। যে গাছ অযত্নে ঝোপঝাড়ে জন্মে, সেই গাছ পাচ্ছি না— এটা বিস্ময়কর। ব্র্যাকের কর্মচারী বৃক্ষপ্রেমিক আবদুল্লাহ আমাকে অপ্রচলিত গাছগাছড়া জোগাড় করে দেন। তিনিও মাকাল ফল পাচ্ছেন না। আশ্চর্য।
মাকাল ফল এর ঔষধি ব্যবহার
এর প্রধান ব্যবহার বমি করানোয়। কেউ এমন কিছু খেয়ে ফেলেছে যে বমি করাতে হবে। তেলাকুচা ফলের রস এক চামচ মুখে দিলেই হলো।
ডায়াবেটিস : যে-কোনো তিতা ফলকেই ডায়াবেটিসের ওষুধ ভাবা হয়। তেলাকুচার ক্ষেত্রেও তাই। এর পাতা এবং মূলের রস না-কি ডায়াবেটিসের মহৌষধ।
হাঁপানি : বংশগত হাঁপানিতে পাতা এবং মূলের রস। কতটুকু খেতে হবে
জানি না।।
পান্ডুরোগে : পান্ডু মানে জন্ডিস, আবার পাতা ও মূলের রস।
লেখা শেষ করার আগে বলি, গ্রামদেশে মাকাল ফলের পাতা ও ডাটা লাউশাকের মতো ঝোল করে খাওয়া হয়। খেতে জঘন্য। আমি ভুক্তভোগী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন