Coccinia grandis -তেলাকুচা বা বিম্বী ফল, শাক – বৃক্ষের কথা – হুমায়ূন আহমেদ – Telakucha Gacher kotha - Humayun Ahmed |
তেলাকুচা বা বিম্বী ফল, শাক – বৃক্ষের কথা – হুমায়ূন আহমেদ – Telakucha - Coccinia grandis - Humayun Ahmed
এক ভোরবেলায় জনৈক ভদ্রলোককে দেখলাম ভ্রু কুঁচকে নুহাশ পল্লীর ঔষধি বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তার হাতে কলম এবং একটা নোটবুক। মাঝে মাঝে নোটবুকে কী সব লেখাও হচ্ছে। আমি আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে গেলাম। ভদ্রলোক হতাশ গলায় বললেন, আসল গাছটাই তো আপনার এখানে নেই।
আমি বললাম, আসল গাছ কোনটা? আসল গাছ হলো বিম্বী। কী বাগান করলেন যেখানে বিম্বী নেই। আমি বললাম, নামটা প্রথম শুনলাম।
ভদ্রলোক বললেন, বিম্বী হলো আমাদের দেশের তেলাকুচা। যার ফলের নাম মাকাল ফল। এখন চিনেছেন?
Coccinia grandis -তেলাকুচা বা বিম্বী ফল, শাক – বৃক্ষের কথা – হুমায়ূন আহমেদ – Telakucha Gacher kotha - Humayun Ahmed - তেলাকুচা |
তেলাকুচা গাছ আসল গাছ।
অবশ্যই। ডায়াবেটিসের যম। তেলাকুচার তিনটা পাতা নিবেন। আগুনের তাপে একটু গরম করে দুপুরে খাবার পর খাবেন। আপনার ডায়াবেটিস যদি না সারে, আমার একটা কান কেটে তেলাকুচা গাছের কাছে পুতে দিয়ে যাব।
আমি বললাম, সেখান থেকে কর্ণগাছ বের হবার কোনো সম্ভাবনা কি আছে?
ভদ্রলোক বললেন, আমি শিক্ষক মানুষ। নিজে রসিকতা করি না। অন্যে যখন করে, সেটাও পছন্দ করি না। তেলাকুচা গাছ সম্পর্কে যা বলেছি ঠিকই বলেছি। বইপত্র পড়ে দেখবেন। গাছ বিষয়ে কিছু জানেন না, বাগান বানিয়ে বসে আছেন!
Coccinia grandis -তেলাকুচা বা বিম্বী ফল, শাক – বৃক্ষের কথা – হুমায়ূন আহমেদ – Telakucha Gacher kotha - Humayun Ahmed |
ভদ্রলোক চলে যাবার পর আয়ুর্বেদাচার্যের বই খুললাম। সেখানে সত্যি সত্যি লেখা—
অনেক সময় আমরা মন্তব্য করি, তেলাকুচার পাতার রস খেলাম, আমার ডায়াবেটিসের সুফল কিছুই হলো না। একটা বিষয় যােগে ভুল হয়ে গিয়েছে। এই রোগ তো আর একরকম দোষে জন্ম নেয় না। এক্ষেত্রে তেলাকুচার পাতা ও মূলের রস তিন চামচ করে সকালে ও বৈকালে একটু গরম করে খেতে হবে। এর দ্বারা রোগী তিন-চার দিনে সুস্থতা বোধ করবেন।'
তেলাকুচীর বোটানিক্যাল নাম Coccinia indica cogn, তেলাকুচা Cucurbitaceae পরিবারের গাছ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন